মো: আ: ওয়াদুদ অধ্যাপক মুহম্মদ আসাদ্দর আলী সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী লুদরপুর গ্রামে ১৯২৯ খৃষ্টাব্দে জন্ম লাভ করেন। তাঁর পিতার নাম মৌলভী মুহম্মদ ওসমানুল্লাহ এবং মাতার নাম মসতুরা খাতুন।পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তাঁর মাতা লুদরপুর আয়ান মুন্সী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা ছিলেন। বাল্যকাল থেকেই তিনি মেধাবী ছাত্র ছিলেন। এছাড়া অন্যান্য সকল বিষয়েও ছিল তাঁর সমান আগ্রহ ও পারদর্শিতা। তিনি ঐতিহ্যবাহী সৈয়দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে সুনামগঞ্জ জুবিলী হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা পাশ করেন। অত:পর তিনি সিলেট সরকারী মুরারিচাঁদ কলেজে ভর্তি হন।সেখান থেকে আই,এ এবং বি,্ধসঢ়;্ধসঢ়;্ধসঢ়;্ধসঢ়;্ধসঢ়;্ধসঢ়;্ধসঢ়;্ধসঢ়;এ পাশ করেন।তিনি উচ্চ শিক্ষার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম,এ ডিগ্রি লাভ করেন।তিনি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে টেলেন্ট স্কলারশীপ হোল্ডার হিসেবে প্রথম শ্রেণীতে বি,এড ডিগ্রি লাভ করেন। লুদরপুর গ্রামের মধ্যে মুহম্মদ আসাদ্দর আলীই সর্বপ্রথম প্রাইমারী পরীক্ষায় সুনামগঞ্জ লোকেল বোর্ডের বৃত্তি লাভ করেন। তাঁর জন্মভ’মি লুদরপুর গ্রামের মধ্যে তিনিই প্রথম গ্রাজুয়েট এবং সর্বোচ্চ শিক্ষিতও। তিনি একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরী গড়ে তুলেন তাঁর ব্যক্তিগত পাঠাগার হিসাবে। পরবর্তিকালে তাঁর জ্ঞান ভান্ডার থেকে উপকৃত হয়েছেন অনেক জ্ঞানীগুনী এবং অনেকেই পেয়েছেন নানান ডিগ্রি ও পদবী। তিনি সাহিত্য ও সংস্কৃতি সংক্রান্ত বিভিন্ন সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।তম্মধ্যে সংলাপ সাহিত্য ও সংস্কৃতি ফ্রন্টের তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যন,জালালাবাদ লেখক সাহিত্য পরিষদের ছিলেন দীর্ঘদিনের সভাপতি,কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের পৃষ্ঠপোষক ও সহ সভাপতি, সুনামগঞ্জ সমিতি সিলেট এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়া মইনুদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজ এবং সিলেট কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন তিনি। এই বহুমূখী প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব আজ আর আমাদের মধ্যে নেই, তিনি চিরদিনের জন্য লোকচক্ষুর অন্তরালে প্রবেশ করলেন। তিনি ছিলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। সিলেটের জ্ঞানীগুনী, মনিষী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সকলেই তাঁকে ভালবাসতেন এবং সম্মানের চোখে দেখতেন। তাঁর শূণ্যস্থান পূর্ণ হবার নয়। আমাদের প্রানপ্রিয় মানুষ গবেষক অধ্যাপক মুহম্মদ আসাদ্দর আলী গত ১২ এপ্রিল রোজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ ঘটিকার সময় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি ৭৬ বছর পর্যন্ত আয়ুপ্রাপ্ত হন। তাঁর বয়সের তুলনায় তিনি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য রেখে গেছেন অমূল্য অবদান, বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন দিক ও বিভাগে তাঁর দৃপ্ত পদচারণা সত্যিই প্রশংসনীয় ও উদীয়মান লেখক সাহিত্যিকদের প্রেরণার বিষয়বস্তু বলে বিবেচিত হবে। তাঁর কর্মের ব্যাপ্তি ছিল বিশাল। তাঁর জীবন ছিল বর্ণাঢ্য। প্রবন্ধ, বিজ্ঞান এবং গবেষনায় অনন্য অবদান রেখে তিনি ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন। ২০ ডিসেম্বর ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ রোজ সোমবার তাঁর হাতে তুলে দেয়া হয় কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার।২০০১ সালে তিনি রাগীব-রাবেয়া পুরস্কার লাভ করেন। বাংলা একাডেমি পুরস্কার অর্জন করায় রোটারেক্ট ক্লাব অব সিলেট সিটির পক্ষ থেকে ১৮ মার্চ শুক্রবার তাঁকে এক উষ্ধসঢ়;ঞ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। ১৩ এপ্রিল বাদ জোহর দরগা প্রাঙ্গনে তাঁর নামাজে জানাযা পড়া হয়।বরেণ্য আলেম দরগাহ মসজিদের ইমাম হাফিজ মাওলানা আকবর আলী সাহেব এতে ইমামতি করেন। তাঁকে হযরত শাহজালাল (রহ:) মাজার সংলগ্ন গোরস্থানে দাফন করা হয়। সিলেটের শিকড় সন্ধানে নিরবতা এসে গেল।নিভে গেল শিকড়ের আলোময় প্রদীপ।মরহুম মুহম্মদ আসাদ্দর আলীর জীবিতাবস্থায় ১৮টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল এবং সে গুলো নিয়ে আসাদ্দর রচনা সমগ্রের ৩খন্ড পৌঁছেছে পাঠকের হাতে।পরবর্তী খন্ডও প্রকাশিত হয়েছে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী নুরুন্নাহার চৌধুরী এবং কন্যা তাইয়্যিবাকে রেখে গেছেন। আমরা গবেষক অধ্যাপক আসাদ্দর আলীর পবিত্র রুহের শান্তি,মাগফেরাত কামনা করি।তিনি যেন পরকালেও শান্তি, সৌন্দর্য্য ও ক্ষমা লাভে সামর্থ হন, মহান দয়াময় প্রভু আল্লাহ পাকের দরবারে এই প্রার্থনা। লেখক:- মো: আ: ওয়দুদ, কবি, সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ।
আপনি আরও পড়তে পারেন
-
নবাবগঞ্জে বন্ধু মহলের উদ্যোগে এতিমদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বন্ধু মহলের উদ্যোগে এতিম শিশুদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার (৩০... -
নবাবগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির শ্রদ্ধা
March 27, 2024 নিউজ ডেস্ক Comments Off on নবাবগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির শ্রদ্ধামহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে পুস্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা... -
নবাবগঞ্জে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত
নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি. ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। মঙ্গলবার...